সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

তিন অপরাধের চার শাস্তি

তিন অপরাধের চার শাস্তিঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর একটি হাদীসের সারকথা এরকম যে, তিন ধরনের অপরাধে আল্লাহ তাআলা চার ধরনের শাস্তি দেন। প্রথমে অপরাধগুলো ও পরে তার শাস্তি উল্লেখ করা হলো।

প্রথম অপরাধ : মুসলমানরা আলেমদের ঘৃণা করবে, আলেমদের প্রতি বিরাগ
ভাব দেখাবে।

দ্বিতীয় অপরাধ : বাজারে বড় বড় বিল্ডিং নির্মাণ করবে। মসজিদের হেফাজত করবে না। অথচ মসজিদ ঝাড়ু দিলে সগীরা গুনাহ মাফ হয়ে যায়।

তৃতীয় অপরাধ : যৌতুক নিয়ে বিয়ে করা হবে।

এই হাদীস শুনে হযরত আবু বকর (রাঃ) শেষ রাতে মসজিদে চলে গেলেন। দেখলেন অন্ধকারে মসজিদের উত্তর পাশে কে যেন বসে আছেন। আস্তে আস্তে কাছে গিয়ে দেখেন তিনি হলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)। হযরত আবু বকর (রাঃ) সালাম দিলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) উত্তর দিয়ে বললেন, আবু বকর! তুমি এত রাতে মসজিদে কেন? হযরত আবু বকর (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ আপনার উত্তর পরে দিব। আগে বলেন, আপনি কিসের জন্য আসলেন? রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বললেন, মসজিদে ঝাড়ু দিলে গোনাহ মাফ হয়ে যায়। আর তোমরা আমাকে সম্মান করে মসজিদ ঝাড়ু দিতে দাও না। তাই আমি রাতে মসজিদ ঝাড়ু দেওয়ার জন্য এসেছি। এবার হযরত আবু বকর (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার ব্যাপারে আল্লাহ কি বলেন নাই যে, আমি আপনার আগের এবং পরের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দিয়েছি? তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, মেরাজের রাতে আমাকে এমন এক জাতির নিকট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যাদের ঠোট আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, হে জিবরাইল! এরা কারা? তখন জিবরাইল (আঃ) বললেন, এরা হল আপনার উম্মতের ঐ সমস্ত বক্তা যারা মানুষকে দাওয়াত দেয়, কিন্তু নিজেরা আমল করে না। তাই এই ভয়ে আমি মসজিদ ঝাড়ু দিতে এসেছি। এবার হযরত আবু বকর (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ)! আমিও মসজিদ ঝাড়ু দিতে এসেছি। হযরত ওমর (রাঃ) উপস্থিত হয়ে বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনারা দুজন কি বলাবলি করেছেন আমি সবই শুনেছি। এমনিভাবে বড় বড় সাহাবীগণ মসজিদ ঝাড়ু দেওয়ার জন্য রাতে মসজিদে একত্রিত হয়ে গেলেন।

উপরে উল্লেখিত তিন অপরাধের চার শাস্তি হলো-

প্রথম শাস্তি : দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে।
দ্বিতীয় শাস্তি : অত্যাচারী শাসক নিযুক্ত করে দিবেন।
তৃতীয় শাস্তি : শাসকরা খেয়ানত করবে।
চতুর্থ শাস্তি : চতুর্দিক থেকে মুসলমানদের উপর শত্র“দের আক্রমণ হবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠের ফজিলত

সাহাবাদের ২৫ টি প্রশ্ন এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উত্তর।

  সাহাবাদের ২৫ টি প্রশ্ন এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উত্তর। ১. প্রশ্নঃ আমি ধনী হতে চাই! উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, অল্পতুষ্টি অবলম্বন কর; ধনী হয়ে যাবে। ২. প্রশ্নঃ আমি সবচেয়ে বড় আলেম (ইসলামী জ্ঞানের অধিকারী) হতে চাই! উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, তাক্বওয়া (আল্লাহ্ ভীরুতা) অবলম্বন কর, আলেম হয়ে যাবে। ৩. প্রশ্নঃ সম্মানী হতে চাই! উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, সৃষ্টির কাছে চাওয়া বন্ধ কর; সম্মানী হয়ে যাবে। ৪. প্রশ্নঃ ভাল মানুষ হতে চাই! উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, মানুষের উপকার কর। ৫. প্রশ্নঃ ন্যায়পরায়ণ হতে চাই! উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, যা নিজের জন্য পছন্দ কর; তা অন্যের জন্যেও পছন্দ কর। ৬. প্রশ্নঃ শক্তিশালী হতে চাই! উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, আল্লাহর উপর ভরসা কর। ৭. প্রশ্নঃ আল্লাহর দরবারে বিশেষ মর্যাদার অধিকরী হতে চাই! উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, বেশী বেশী আল্লাহকে স্মরণ (জিকির) কর। ৮. প্রশ্নঃ রিযিকের প্রশস্ততা চাই! উঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করলেন, সর্বদা অযু অবস্থায় থাকো। ৯. প্রশ্নঃ আল্লাহর কাছে সমস্ত দোয়া কবুলের আশা করি! উঃ রাসূলুল্লাহ ...

মাহারাম এবং গায়রে মাহারাম কারা ?

মাহারামঃ  যে সকল পুরুষের সামনে নারীর দেখা দেওয়া, কথা বলা  জায়েজ এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন সম্পূর্ণ  হারাম তাদের কে শরীয়তের পরিভাষায় মাহরাম বলে। গায়রে মাহারামঃ  যে সকল পুরুষের সামনে যাওয়া নারীর জন্য শরীয়তে জায়েজ নয় এবং যাদের সাথে বিবাহ বন্ধন বৈধ তাদের কে গায়রে মাহরাম বলে। সূরা আন নূরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নারীর মাহরাম নির্ধারিত করে দিয়েছেন । সূরা আন নূরের পূর্ণ আয়াতঃ "আর মুমিন নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই-এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজেদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নি...